ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৫ , ১২ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
হিজাব বিতর্কে শিক্ষক বরখাস্ত উত্তাল ভিকারুননিসা আজ জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ মোট ভোটার ১২ কোটি ৬১ লাখ ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণায় উৎসবমুখর ঢাবি ক্যাম্পাস প্রকৌশল শিক্ষার্থীদের উপর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ গাজীপুরে বিএনপি নেতার বাড়িতে ডাকাতি জেনেভা ক্যাম্পে সেনা অভিযানে গ্রেফতার ১১ গোবিন্দগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২ ভূমিদস্যু ও জালিয়াতি সম্রাট আসলামের অবৈধ কর্মকাণ্ডে গোপন তদন্ত শুরু ভারতে কারাভোগ শেষে দেশে ফিরলেন ১৭ বাংলাদেশি প্রধান আসামির মৃত্যুদণ্ড সহযোগীর পাঁচ বছর কারাদণ্ড জটিল রোগে ৩ লাখ টাকা পাবেন সরকারি কর্মচারীরা আবু সাঈদ হত্যা মামলায় ট্রাইব্যুনালের বিচার শুরু কর্মস্থলে শ্রমিকের মৃত্যু কমছে না আমতলীতে যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যে ও ভিত্তিহীন বানোয়াট সংবাদ প্রকাশে নিন্দা জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যুবদল নেতা আমতলীতে প্রতিবন্ধীর জমি দখলের পায়তারা,সালিশ বৈঠকে বসে মারামারির অভিযোগ উঠেছে ফরিদপুরে আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত নিয়মিত মাসোহারা নিচ্ছে পুলিশ ভিকারুননিসায় হিজাবকাণ্ড অভিযুক্ত সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত প্রণোদনার বীজ আমদানিতে অমিত-বঙ্গ সিন্ডিকেট বহাল ৩০৯ আবেদনের নিষ্পত্তি

প্রণোদনার বীজ আমদানিতে অমিত-বঙ্গ সিন্ডিকেট বহাল

  • আপলোড সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ২৭-০৮-২০২৫ ০৫:৩৫:০৯ অপরাহ্ন
প্রণোদনার বীজ আমদানিতে অমিত-বঙ্গ সিন্ডিকেট বহাল
* ভারতীয় কোম্পানীর আধিপত্য * কৃষিতে সংস্কারের ছোঁয়া লাগেনি * রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও আগের সিন্ডিকেট বহাল রয়েছে সরকার সারা দেশের কৃষকদের মৌসুম অনুযায়ী বিভিন্ন ফসলের প্রণোদনা দিয়ে থাকে। প্রণোদনার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় বিদেশ থেকে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে বীজ আমদানি করে। পরে তা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) মাধ্যমে কৃষকের হাতে পৌঁছে দেয়। এবছর ডিএই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমেও সরাসরি বীজ ক্রয় করেছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার আমলে বীজ আমদানির এই লুটপাটের সাথে সাবেক কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক ও সাবেক সচিব ওয়াহিদা আক্তারের লোকজনের সিন্ডিকেট জড়িত ছিল। কিন্তু রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও সেই সিন্ডিকেট বহাল রয়েছে। তাদের অনিয়মের কারনে চলতি মৌসুমে যথাসময়ে বীজ না পেয়ে মেহেরপুর ও উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এভাবে নিম্নমানের ভেজাল বীজ কৃষকের হাতে তুলে দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটে নিচ্ছে। বিগত আওয়ামীলীগের সময় সাবেক এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজার আত্মীয় পরিচয়দানকারী কৃষিবিদ জিল্লুর রহমান সাবেক কৃষিমন্ত্রী নাম ব্যবহার করে খামার বাড়ী এবং বিএডিসির বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ন্ত্রন করতো। বিভিন্ন প্রকল্পে তার আত্মীয় এর প্রতিষ্ঠান বঙ্গ এগ্রিটেক এর মাধ্যমে করানো হয়। কৃষি মন্ত্রী ও বিএডিসির একজন কর্মকর্তার প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটি ভারত থেকে নিম্নমানের বীজ (ভুট্টা, সূর্যমুখী, পেঁয়াজ বীজ-এন-৫০) আমদানী করে কৃষকদের প্রদান করে। উক্ত বীজ কৃষকরা বপন করে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। চলতি বছরও বঙ্গ এগ্রিটেক প্রতিষ্ঠানটি সময়মত কৃষকদের বীজ সরবরাহ করতে পারেনি। এতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল তথা মেহেরপুর ও মুজিবনগরে সাত টন বীজ চাষীদের হাতে এখনও পৌছায়নি। সংস্লিষ্টরা জানান, প্রভাবশালী এই সিন্ডিকেট যথাসময়ে বীজ দিতে না পারার কারনে মেহেরপুরের কৃষকরা বিপদে পড়েছেন। মৌসুম শেষ হওয়ায় বর্তমানে এই বীজ দিয়ে চাষীদের আর কোন কাজে আসবে না। ফলে চাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন এবং সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। কৃষি মন্ত্রনালয় ও বিএডিসির একাধিক কর্মকর্তা জানান, ভারতীয় কাবেরী সিড কোম্পানীর প্রতিনিধি অমিত দাস এবং বঙ্গ এগ্রোটেক এর একজন ব্যবাসায়ীক পার্টনারের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরও বিএডিসি ও ডিএই এর বীজ সরবরাহসহ বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ নিয়ন্ত্রন করছে। বিগত কয়েক বছরে সাবেক কৃষি মন্ত্রীর ছাত্রছায়ায় উক্ত প্রতিষ্ঠানটি নিন্মমানের বীজ সরবরাহ করে সরকারের কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে। বর্তমানে জামাত ও বিএনপির নাম ভাঙ্গিয়ে অনিয়ম করে কাজ ভাগিয়ে নিচ্ছে। এদের আমদানীকৃত কীটনাশকের গুনগতমানও ঠিক নেই। এমতাবস্থায় সরকার উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিলে কৃষকের ক্ষতির মুখে পড়বে। উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গত ১৩ জুলাই জাতীয় একটি দৈনিকে কৃষি প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ ক্রয়ে অনিয়ম প্রকাশিত হয়। এতে বঙ্গএগ্রিটেক এর নাম আসে। ইহা ছাড়াও অন্যান্য পত্রিকায় ও তাদের অপকর্মের খবর আসে। সম্প্রতি মেহেরপুরে সরকারি পেঁয়াজ বীজ সরবরাহ নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ উঠেছে। কৃষকদের অভিযোগ মানহীন পেঁয়াজ বীজ দেয়ার পাঁয়তারা হয়েছে। মেহেরপুরের মোনাখালী গ্রামের জাকির হোসেন নামে একজন কৃষক বলেন, সময় মতো বীজ দেওয়া হয়নি। সময় পার হওয়ার পর দিলে তো কাজ হবে না। মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সামসুল আলম বলেন, মান ভাল না থাকায় বীজ পরে ফেরত দেওয়া হয়েছে। অন্য একটি প্রতিষ্ঠান থেকে নতুন করে সরবরাহ নেওয়া হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা জানান, ডিএই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে সরাসরি বীজ সংগ্রহের কারনে নিন্ম মানের বীজ দিচ্ছে এই সিন্ডিকেট। কারন চার শ’ বা ৫ শ’ কেজি বীজ কিনলে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরবরাহকারি প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে আমদানী না করে স্থানীয় বাজার থেকে নিন্মমানের বীজ কিনে সরবরাহ দেয়। এতে সরবরাহকারি লাভবান হলেও কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। কোন প্রতিষ্ঠান ২০/ ২৫ টনের নিচে আমদানী করার প্রয়োজন না হলে সাধারণত এলসি খুলতে আগ্রহী হন না। তাই ডিএই বা বিএডিসির প্রধান কার্যালয় থেকে দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয় করা হলে ভাল মানের বীজ পাওয়া সম্ভব। বিএডিসির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৬০ টন এন-৫৩ জাতের গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজবীজ আমদানি করা হয় ভারত থেকে। দাম প্রতি কেজি দুই হাজার ৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। চারটি বীজ আমদানি কোম্পানির মাধ্যমে বিএডিসি এই বীজ আমদানি করে। এ জন্য মোট খরচ হয় ১২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। চলতি অর্থ বছরেও বিএডিসি ও ডিএই বীজ আমাদানী করছে। এখনো সেই পুরনো প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রন করছে। কৃষি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারি কর্মকর্তারা প্রণোদনার নামে কৃষকদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে কৃষক এভাবেই ঠকবেন। এতে নির্দিষ্ট সময়ে হালি পেঁয়াজ বাজারে আসবে না। কাক্সিক্ষত উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রাও পূরণ না হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বঙ্গ অ্যাগ্রিটেকের পরিচালক নাজমুল কবির রাসেল বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠান কোন সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত নয়। বরং তারা বিগত সরকার আমলে বীজ সরবরাহ করে লোকসান গুনতে হয়েছে। কারণ ঐ সময়ে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করতো মন্ত্রী সচিব এর কাছের লোক হিসেবে পরিচিত ফারুক নামের একজন। বিএনপির লোক বলে তাদের কোম্পানীকে দূরে সরিয়ে রাখত। এ ব্যাপারে কৃষি সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান বলেন, বিগত অর্থ বছরে ৯০০ কেজির মতো প্রণোদনার বীজে সমস্যা ছিল। তখন দ্রুত বীজ কোম্পানি লাল তীরের সঙ্গে কথা বলে যুক্তরাষ্ট্র থেকে উন্নত বীজ এনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে সরবরাহ করা হয়েছিল। পেঁয়াজের বীজ নিয়ে কোন অনিয়মের ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বাড়ছে পারিবারিক সহিংসতা, হত্যাকাণ্ড স্টাফ রিপোর্টার বাংলাদেশে পারিবারিক সহিংসতা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে, যার ভয়াবহ পরিণতি হিসেবে ব্যাপকহারে হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে। জানা যায়, চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসেই সারা দেশে দেড় হাজারেরও বেশি খুনের মামলা দায়ের হয়েছে, যার ৪০ শতাংশের অধিক ঘটেছে পারিবারিক কলহের জেরে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা শুধু আইনশৃঙ্খলার সংকট নয়, বরং এটি সামাজিক সম্পর্কের ভাঙন, মানসিক স্বাস্থ্য সংকট এবং মূল্যবোধের অবক্ষয়ের চিত্র তুলে ধরছে। তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, সামাজিক ও পারিবারিক দ্বন্দ্ব-কলহের কারণে অবলীলায় খুন হচ্ছে মানুষ। অধিকাংশই ঘটনাই ঘটছে শিক্ষিত পরিবারে। বাবা-মায়ের হাতে সন্তান, সন্তানের হাতে বাবা-মা, পরকীয়ার কারণে স্বামীর হাতে স্ত্রী, স্ত্রীর হাতে স্বামী, সম্পত্তির জেরে এক ভাই আরেক ভাইকে হত্যা করছে। প্রায় প্রতিটি ঘটনাই তুচ্ছ কোনো কারণে ঘটছে। একটি ঘটনার নৃশংসতা ছাড়িয়ে যাচ্ছে আরেকটিকে। পুলিশের তথ্যানুযায়ী, ২০২৫ সালের প্রথম পাঁচ মাসে সারাদেশে এক হাজার ৫৮৭ খুনের মধ্যে রাজধানীতে ১৬৮ জন খুন হয়। অধিকাংশ খুনের কারণই পারিবারিক। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা যায়, দেশে প্রতিদিন গড়ে খুন হচ্ছে ১০ থেকে ১২ জন। এর অধিকাংশই পারিবারিক ও সামাজিক কারণে। আর এর প্রধান শিকার নারী ও শিশু। ঢাকা মহানগরে গত পাঁচ বছরে খুনের মামলা হয়েছে এক হাজার ১০৬১টি। ২০২০ সালে ২১৯টি, ২০২১ সালে ১৬৬টি, ২০২২ সালে ১৭২টি, ২০২৩ সালে ১৬৫টি এবং ২০২৪ সালে মামলা হয়েছে ৩৩৯টি। এসব হত্যাকাণ্ডের বড় একটি অংশ ঘটেছে পারিবারিক কলহ ও দ্বন্দ্বে। হত্যাকাণ্ডের পরিসংখ্যানে ঢাকাই শীর্ষে। তবে আয়তন বিবেচনায় ঢাকার জনসংখ্যাও সর্বাধিক। শুধু ঢাকা নয়, পুরো দেশেই পারিবারিক কলহ আর দ্বন্দ্বের কারণে হত্যা বাড়ছে। গত মে মাসে সারাদেশে খুনের মামলা হয়েছে ৩৪১টি। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালে স্বামীর হাতে খুন হন ১৮০ জন নারী, স্বামীর পরিবারের সদস্য দ্বারা ৪০ জন, নিজের পরিবারের সদস্য দ্বারা ৫৮ জন এবং আত্মহত্যা করেন ১৭৪ জন নারী। ২০২৩ সালে স্বামীর হাতে খুন হন ২০৭ জন নারী, স্বামীর পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৫৩ জন, নিজের পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৩২ জন এবং আত্মহত্যা করেন ১৪২ জন নারী। ২০২২ সালে স্বামীর হাতে খুন হন ২০৬ জন নারী, স্বামীর পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৪৪ জন, নিজের পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৪২ জন এবং আত্মহত্যা করেন ৯৭ জন নারী। ২০২১ সালে স্বামীর হাতে খুন হন ২২৪ জন নারী, স্বামীর পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৭৩ জন, নিজের পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৭৫ জন এবং আত্মহত্যা করেন ১৪২ জন নারী। ২০২০ সালে স্বামীর হাতে খুন হন ২৪০ জন নারী, স্বামীর পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৭১ জন, নিজের পরিবারের সদস্য দ্বারা খুন ৫৬ জন এবং আত্মহত্যা করেন ৯০ জন নারী। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, গত পাঁচ বছরে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন ১০৫৭ জন নারী। আত্মহত্যা করেন ৬৪৫ জন। সামাজিক যে অপরাধগুলো সংঘটিত হচ্ছে তার বেশিরভাগই অর্থ-সম্পদ কেন্দ্র করে। একটা সময় ছিল যখন পরিবারের মধ্যে সম্পদ ভাগাভাগি হতো না। কিন্তু পরিস্থিতি বদলেছে। জমি কেন্দ্র করে এখন সামাজিক অপরাধ বেশি সংঘটিত হচ্ছে। মানসিক সমস্যাও হত্যাকাণ্ডের কারণ। এছাড়া মাদকাসক্তি ও পরকীয়ার জেরেও খুন হচ্ছে। এ রকম ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সামাজিক অবক্ষয়কেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এসব ঘটনার পেছনে প্রযুক্তিনির্ভর জীবন, সহমর্মিতার অভাব, টিভি সিরিয়ালে ক্রাইম সিন দেখে হত্যায় উৎসাহিত হওয়া এবং ব্যক্তিনির্ভর জীবন গড়ে ওঠাকে দায়ী করা হচ্ছে। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করা, একে অপরকে ছাড় দেওয়ার মনোভাব গড়ে তোলা এবং সামাজিক সংগঠনগুলোকে সক্রিয় করতে হবে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্পর্কের জায়গাটা দিন দিন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। এর বেশ কিছু কারণ আছে। এর মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক সংকট, সুস্থ পারিবারিক বিনোদনের অভাব, তথ্য-প্রযুক্তির অপব্যবহার। মনস্তাত্ত্বিক জায়গা থেকে পরস্পরের সঙ্গে বন্ধনের জায়গায় ঘাটতি হচ্ছে। এছাড়া, পারিবারিক সহিংসতা কমাতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন আইন হয়েছে। শুধু আইন হলেই হবে না, আইনের প্রয়োগ দরকার। শুধু মেয়েরাই সহিংসতার শিকার হয় তা নয়। পুরুষ ও নারী উভয়েই সহিংসতার শিকার হয়। তথ্য-প্রযুক্তির যুগে পরকীয়া অনেক বেশি বেড়েছে। মানুষের মধ্যে যে ধৈর্যশীলতা থাকা দরকার তা নেই। নৈতিকতা, মূল্যবোধ কমে গেছে। এসব মানসিক অস্থিরতা পারিবারিক সহিংসতার মূল কারণ। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সমাজবিজ্ঞানী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, এ ধরনের অপরাধ কমাতে হলে পরিবারের পাশাপাশি সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস বাড়ানোর কথাও বলছেন তারা। প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানবিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সবাইকে আরও মনোযোগী হতে হবে।

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স